মসজিদের ছবি বাংলাদেশ অসংখ্য সুন্দর মসজিদ দেশ জুড়ে ছড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের হাজারো সুন্দর মসজিদের মাঝে সেরা গুলো বেঁছে নেওয়া খুবই কঠিন।
পৃথিবীর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান তৃতীয়তম। ইসলামের সুচনা লগ্ন থেকেই বাংলাদেশে ইসলামের সুশীলতম বাতাস বয়ে যাচ্ছে।এদেশের ইসলাম প্রিয় মানুষ দেশের আনাচে কানাচে অসংখ্য মসজিদ নিজেদের টাকায় তৈরী করেছে। আবার অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন দেশ বা সংস্থা থেকে অনুদানের অর্থ এনে মসজিদ নির্মান করেছে।যা আমাদের ইসলামিক কৃষ্টি ও কালচার কে সুন্দর এবং স্বয়ং সম্পুর্ন করেছে।
আজকে এই পোষ্টে মসজিদের ছবি বাংলাদেশ নাম দিয়ে বিভিন্ন ছবি পোষ্ট করবো। যাতে সৌন্দর্য ও সংগ্রহের ভিত্তিত দেওয়া হলো।
আপনার এলাকার মসজিদের ছবি আমাদের ফেসবুক পেইজে পাঠাতে পারে আমরা উপযুক্ত ক্রেডিট সহ প্রকাশ করবো।
মসজিদের ছবি বাংলাদেশ সিরিয়াল অনুযায়ী দেওয়া হলোঃ
১।রমজান মিয়া জামে মসজিদ। কবির হাট, নোয়াখালী।৩০০ বছরের অধিক পুরাতন। প্রত্নতান্ত্রিক ভ্যালু সমৃদ্ধ এই স্থাপনা স্থানীয়দের কাছে চৌধুরী মসজিদ নামে অধিক পরিচিত।
রমজান মিয়া জামে মসজিদ, কবিরহাট, নোয়াখালী -www.islamiblogbd.com |
২।মির্জাপুর শাহী মসজিদ, অটোয়ারী, পঞ্চগড়। মনোরম এই মসজিদটি লম্বা ৪০ফুট। এটির প্রস্থ হচ্ছে ২৪ফুট। চারকোনা বিশিষ্ট চারটি মিনার আছে। ছাদে আছে পাশাপাশি তিনটি মিনার। নকশায় আছে বিভিন্ন টেরাকোটার ব্যবহার।
মির্জাপুর শাহী মসজিদ, অটোয়ারী, পঞ্চগড় - www.islamiblogbd.com |
৩।বায়তুল আমান জামে মসজিদ, হযরতপুর, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা। মসজিদটি হযরতপুর তথা কেরানীগঞ্জের কৃতি সন্তান আমান উল্লাহ আমান ২০০৪ সালে নির্মান করেন। যিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত এবং চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।
বায়তুল আমান জামে মসজিদ, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা - www.islamiblogbd.com |
৪।বাঘা মসজিদ, বাঘা, রাজশাহী। প্রায় ৫০০ বছরের পুরাতন। রাজশাহী শহর থেকে মাত্র ৪১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। একপাশে একটি দিঘী অন্য পাশে একটি কবরস্থান রয়েছে। ১৮৯৭ সালে ভুমিকম্পে ছাদের অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রায় ৭৬ফুট লম্বা ও প্রস্থে ৪২ফুট। ধবংস প্রাপ্ত ছাদ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ পরে ছাদ ও ছাদের উপর গম্বুজ পুনরায় নির্মান করেন।মসজিদের ছবি বাংলাদেশ এর তালিকায় এই মসজিদ চার নম্বরে আছে।
বাঘা মসজিদ, বাঘা, রাজশাহী - www.islamiblogbd.com |
৫।কুসুম্বা মসজিদ, মান্দা, নওগাঁ। নওগাঁ যেতে আত্রাই নদীর উপর অবস্থিত মান্দা ব্রিজ পার হয়ে মান্দার কুসুম্বা গ্রামে অবস্থিত এই প্রাচীন মসজিদ।এই মসজিদ কুসুম্বা দিঘীর পশ্চিম পাশে অবস্থিত। এটি ধসুর বর্ণের পাথরে তৈরী।বাংলাদেশে চলমান পাঁচ টাকার নোটে এই মসজিদের ছবি ছাপানো আছে। নির্মানকাল লেখা আছে ৯৬৬ হিজরি।
কুসুম্বা মসজিদ, মান্দা, নওগাঁ - www.islamiblogbd.com |
৬।হাটহাজারী শাহী জামে মসজিদ, হাটহাজারী, চট্রগ্রাম।এটি হাটহাজারীতে অবস্থিত আল - জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসাতে অবস্থিত। বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভুমিকা রেখে চলেছে এই প্রতিষ্ঠান। এটি একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান।
হাটহাজারী শাহী জামে মসজিদ - www.islamiblogbd.com |
৭।আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ, চট্রগ্রাম। মোগল আমলের স্থাপত্য শৈলীর ব্যবহার এখানে লক্ষ্য করা যায়। চট্রগ্রাম শহর থেকে মাত্র সাড়ে সাত কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান।বড় বড় পাথর ব্যবহার করে দিল্লীর শাহী মসজিদের আদলে এই মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে। ১৬৬৭ সালে আওরঙ্গোজেব শায়েস্তা কে একটি মসজিদ নির্মানের নির্দেশ দেন। কারণ ছিলো চট্রগ্রামের স্মৃতি ধরে রাখা। স্মৃতি ধরে রাখতে এই মসজিদ গড়ে তোলা হয়।তার পর এখানে ইমাম খতীব নিয়োগ দেওয়া হতো মদিনার আওলাদে রাসুলগন।
আন্দর কিল্লা শাহী জামে মসজিদ - www.islamiblogbd.com |
৮।কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। যে মসজিদের পাশে শায়িত আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। যিনি জনগনের মাঝে বিদ্রোহী কবি নামে অধিক পরিচিত তিনি এই মসজিদের পাশে সমাহিত আছেন। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেদ্রীয় মসজিদ এটি। মসজিদ টি অনন্য এর নির্মানশৈলী, নান্দনিকতা ও কারুকার্যময়তার জন্য।
কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা, বিশ্ববিদ্যালয় - www.islamiblogbd.com |
আরো কিছু মসজিদের ছবি বাংলাদেশ এরঃ
৯।বায়তুল আমান জামে মসজিদ, গুটিয়া, বরিশাল। গুটিয়া মসজিদ নামে বেশি পরিচিত। এস এম সরফুদ্দিন আহমেদ এই মসজিদ কমপ্লেক্সের নির্মান ব্যয় বহন করেন। তার গ্রামের বাড়ী চাংগুরিয়া। এই কমপ্লেক্সের ভেতরে কুড়ি হাজার মুসল্লির ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ঈদের মাঠ রয়েছে। মুল কমপ্লেক্সে প্রবেশ পথে ডান পাশে একটি বড় পুকুর রয়েছ।অনেক বড় একটি মিনার এই মসজিদের সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিয়েছে। মসজিদের মিনারটির উচ্চতা ১৯৩ ফুট। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৩সালে এটির নির্নান কাজ শুরু করে ২০০৬সালে এর কাজ শেষ হয়।
আরো পড়ুনঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ।
বায়তুল আমান জামে মসজিদ, গুটিয়া, বরিশাল - www.islamiblogbd.com |
১০।আতিয়া মসজিদ, টাঙ্গাইল। দেলদুয়ার উপজেলা টাঙ্গাইল জেলার অধীনে এই মসজিদ টি অনেক পুরাতন একটি মসজিদ।ঐতিহাসিক এই মসজিদটি বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন গুলোর মধ্যে জনপ্রিয় একটি। বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এই স্থাপনাটির দেখভালে দ্বায়িত্বে নিয়োজিত। এতে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায় করা হয়।এটি নির্মান কাল নিয়ে দুই ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। প্রাপ্ত্য শিলা লিপি থেকে এই নির্মান কাল পাওয়া যায় ১৬০৮ - ১৬০৯ অথবা ১৬১০ - ১৬১১ সাল।
আতিয়া মসজিদ, টাঙ্গাইল - www.islamiblogbd.com |
১১।বজরা শাহী জামে মসজিদ, সোনাইমুড়ি, নোয়াখালী। ১৮শ শতকে নির্মিত।বজরা ইউনিয়নে অবস্থিত। বজরা ইউনিয়ন নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন। নোয়াখালীর উল্লেখ্য যোগ্য ঐতিহাসিক স্বাপনার মধ্যে এটি একটি। ১৯৯৮ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই মসজিদটি দ্বায়িত্বভার গ্রহন করেন। দুর্লভ স্থাপনা সংরক্ষনের জন্য এই বিভাগ কাজ করে চলেছ।
বজরা শাহী জামে মসজিদ, সোনাইমুড়ি, নোয়াখালী - www.islamiblogbd.com |
১২।তেতুলিয়া জামে মসজিদ, সাতক্ষীরা, বাংলাদেশ। সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় অবস্থিত। গ্রামের নাম তেতুলিয়া। জমিদার পরিবার এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। জমিদার কাজী পরিবার এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। জমিদারের নাম ছিলো খান বাহাদুর সালামাতুল্লাহ। সে সালাম মঞ্জিল নামের একটি জমিদার বাড়ীর প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন। যা বর্তমানে ধ্বংস প্রাপ্ত। ৬গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদের চার টি মিনার ছিলো। মসজিদের ছবি বাংলাদেশ এর তালিকায় ১২ স্থান দখল করে আছে। তার প্রত্নতাত্ত্বিক মুল্যের জন্য।
তেতুলিয়া জামে মসজিদ সাতক্ষীরা - www.islamiblogbd |
১৩।খেরুয়া মসজিদ, শেরপুর, বগুড়া। মির্জা মুরাদ খান কাকশাল যার বাবার নাম ছিলো জহূর উদ্দিন কাকশাল। তিনি ১৫৮২ সালে এই প্রাচীন মসজিদ টি নির্মান করেন। সারা বাংলাদেশের হাজারো প্রত্ন নিদর্শনের মধ্যে এই খেরুয়া মসজিদ গুরুত্বপুর্ন স্থান দখন করে আছে। মোগল আমলের স্থাপত্য শৈলীর সাথে সুলতানী আমলের স্থাপত্য কর্ম যোগ হয়ে এই মসজিদ গড়ে উঠেছে। ৪৩৫ সালের পুরাতো এই মসজিদ শেরপুর উপজেলার খোন্দকার টোলায় অবস্থিত।
খেরুয়া মসজিদ, শেরপুর, বগুড়া - www.islamiblogbd.com |
১৪।খনিয়া দিঘী মসজিদ, চাঁপাই নবানগঞ্জ। খনিয়া দিঘীর পাশে অবস্থিত তাই খনিয়া দিঘী মসজিদ বলা হয়। জৈনক্য রাজবিবি নামে একজন ১৪৮০সালে এই মসজিদ নির্মান করেন বলে ধারণা করা হয়।রাজশাহী বিভাগের চাঁপাই জেলা এই মসজিদ গড়ে উঠেছে।উপজেলার নাম শিবচর যা চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ২৬০৪ বর্গমিটার আয়তনের এই মসজিদ লম্বা ৬৪ফুট ও প্রস্থ ৪২ফুট।বাইরের দিকে কারুকার্য মন্ডিত, পুরোটাই ইটের তৈরী।
খনিয়া মসজিদ, শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ - www.islamiblogbd.com |
১৫।শহীদি মসজিদ, কিশোরগঞ্জ।এটি কিশোরগঞ্জের একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা।এটি জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। ৫তলা বিশিষ্ট মিনার এই মসজিদের প্রধান আকর্ষন। এই মিনার আবার তিন তলা বিশিষ্ট মসজিদের উপরে নির্মান করা হয়েছ। এই মসজিদ কে ঘিরে একটি মাদ্রাসা পরিচালিত হয়ে থাকে। এই মসজিদ থেকে অল্প একটু দূরে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাও শোয়ালাকিয়া অবস্থিত।
শহীদি মসজিদ, কিশোরগঞ্জ - www.islamiblogbd.com |
আরো তিনটি মসজিদের ছবি বাংলাদেশ
মসজিদের ছবি বাংলাদেশ এই পর্যায়ে ১৬ নম্বরে আছে চাটমোহর শাহী মসজিদ পাবনা।বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও প্রাচীন মসজিদ। মাত্র ২০০গজ দূরে অবস্থিত উপজেলা কমপ্লেক্স থেকে। একসময় মসজিদটি ধ্বংস স্তুপে পরিনত হয়েছিলো। ১৯৮০সালে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটিকে পুনরায় নির্মান করে।একসময় এই চাটমোহর ছিলো মোগল ও পাঠানদের অবাধ বিচরণ ভুমি। এই মসজিদে একটি ফরাসী শিলালিপি ছিলো যা বর্তমানে বরেন্দ্র জাদুঘরে রক্ষিত আছে।
চাটমোহর শাহী মসজিদ, পাবনা - www.islamiblogbd.com |
আরো একটি মসজিদ আছে যার নাম মিঠাপুকুর বড় মসজিদ, রংপুর। মসজিদের ছবি বাংলাদেশ এ এর অবস্থান ১৭তম।এটি রংপুর এর মিঠাপুকুরে অবস্থিত। অনেকে একে তিন কাতারের মসজিদ নামেও ডেকে থাকে। সম্ভবতঃ এটি রংপুরের প্রাচীন মসজিদ।এটি এক প্রত্নতান্ত্রিক স্থাপনা। যা দেখভালের দায়িত্বে আছে বাংলাদেশের পুরাকীর্তি বিভাগ।জনশ্রুতি আছে মোগল আমলের শেষ দিকে এটি নির্মান করা হয়।
মিঠাপুকুর বড় মসজিদ, রংপুর - www.islamiblogbd.com |
মসজিদের ছবি বাংলাদেশ এ সবচেয়ে শেষের টি হলো আমাদের প্রিয় তারা মসজিদ। অপরুপ সৌন্দর্য্য মন্ডিত তারা মসজিদ।নীল রঙের তারা খচিত।মার্বেল পাথর দিয়ে নির্মিত এই নয়নাভিরাম মসজিদটি। তারা মসজিদ সম্পর্কে জাননু।
এছাড়াও বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন মসজিদ। সরকারী ও ব্যক্তি অর্থায়নে নির্মিত হাজারো মসজিদ।যেগুলো দেখতে যেমন নয়নাভিরাম, সৌন্দর্য্য মন্ডিত। ্তেমনি আছে প্রত্নতাত্ত্বিক মর্যাদা আছে অত্যাধুনিক সুবিধা ও নির্মান শৈলী।