ইসলামিক উক্তি শুধু আমাদের জীবন বদলে দিতে পারে তা নয়।
এমন কি যারা বিধর্মী তাদের কেও দেখাতে পারে আলোর পথ।
জীবনে চলতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন সমস্যায় আপতিত হয়ে ভেঙ্গে পড়ি।
বিপদ আসলেই ভেঙ্গে পড়তে হবে তা কিন্তু নয়।
ধৈর্য্য সাথে সাথে মন কে অটুট রাখতে হবে। আমাদের জীবন ক্ষনিকের।
কখন মৃত্যর হাতছানি এসে ডাক দেবে কেউ বলতে পারিনা।
তাই কুর'আন ও হাদিসের বিভিন্ন জীবন ঘন্ঠিন ইসলামিক উক্তি আমাদের পথ বাতলে দিতে পারে।
অনেকে সামান্য কষ্টে নিজের জীবনকে শেষ করে দিতে চায়। তাদের মত আহম্মক ও নির্বোধ কেউ নেই।
জীবন এত সহজ না। মরে গেলেই কি বেঁচে যাবে। তা নয়। পরকালের জন্য কি পাথেয় সঞ্চয় করেছো?
আল্লাহ তথা এই দুনিয়ার মহান সৃষ্টিকর্তা তার নিকট কি জবাব দিবে?
আমি চেষ্টা করেছি জীবন ঘনিষ্ঠ ১০০ টি ইসলামিক উক্তি খুঁজে বের করার। যা কুর'আন ও হাদীস হইতে উদৃত।
আল্লাহ আমার এই চেষ্টাকে কামিয়াব করুন।আমীন।
কুর'আন হইতে সংগৃহিত ইসলামিক উক্তি সমুহঃ
১।আর কণ্ঠ স্বর নিচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর। (সুরা লোকমান : আয়াত ১৯)
২।মাতা-পিতা, আত্মীয় - স্বজন, অনাথ ও দরিদ্রদের প্রতি সদয় ব্যবহার করবে।
মানুষের সাথে সদালাপ ও প্রাঞ্জল ভাষায় কথা বলবে। (সুরা বাকারাহঃ আয়াত ৮৩)
৩।মাপ দেওয়ার সময় মাপ পুর্ণমাত্রায় করবে, আর ওজন করবে ত্রুটিহীন দাঁড়িপাল্লায়। (সুরা বনি ইসরাঈলঃ আয়াত ৩৫)
৪।যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, সে সম্পর্কে কথা না বলা অর্থাৎ জ্ঞানহীন অসাড় কথা না বলা। (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৩৬)
৫।জমিনে গর্বভরে চলাফেরা করো না, তুমি কক্ষনো জমিন (ভুমি) কে বিদীর্ণ করতে পারবে না, আর উচ্চতায় পর্বতের ন্যায় হতেও পারবে না। (সুরা বনি ইসরাঈলঃ আয়াত ৩৭)
৬।আপনি দৃষ্টি তুলে ওই বস্তুর দিকে (লোভাতুর দৃষ্টিতে) তাকাবেন না, যা আমি তাদের মধ্যে কয়েক প্রকার লোককে ভোগ করার জন্যে দিয়েছি, তাদের জন্য চিন্তিত হবেন না ।
আর মুমিনদের জন্য তোমার অনুকম্পার ডান মেলে দাও। (সুরা হিজরঃ আয়াত ৮৮)
৭।কোন পাপাচারী যদি তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে, তাহলে তার সত্যতা যাচাই করে লও।
তা না হলে তোমরা অজ্ঞতাবশতঃ কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতি করে বসবে, অতঃপর তোমরা যা করেছ সেজন্য তোমাদের কে অনুতপ্ত হতে হবে।(সুরা হজুরাতঃ আয়াত৬)
৮।'যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবে।
অতপর যদি তাদের একদল অপর দলের ওপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে।
যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দেবে এবং ইনছাফ করবে।
নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।' (সুরা হুজুরাত : আয়াত ৯)
৯।মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে।
কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না।
কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই জালেম। (সুরা হুজুরাত : আয়াত ১১)
১০।মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ।
আর গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে।
তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়াকে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই কর।
আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবাহ কবুলকারী, পরম দয়ালু। (সুরা হুজরাত : আয়াত ১২)
১১।হে বনি আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না।
তিনি অপব্যয়ীদের পছন্দ করেন না। (সুরা আরাফ : আয়াত ৩১)
১২।তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না, সে ব্যক্তি তা গোপন করে, তার অন্তর পাপী। (সুরা বাকারাঃআয়াত ২৮৩)
১৩।আমরা রসূলগণের মধ্যে কারও ব্যাপারে তারতম্য করি না। (সুরা বাকারাঃ আয়াত ২৮৫)
১৪।পরস্পর বিছিন্ন হয়ো না। (সুরা আল ইমরানঃ আয়াত ১০৩)
১৫।তোমাদের ভেতর এমন একটি দল থাকা উচিত, যারা ভালো কাজের প্রতি আহ্বান জানাবে, সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে। (সুরা আল ইমরানঃ আয়াত ১০৪)
কুর'আনের আরো জীবন ঘনিষ্ঠ ইসলামি উক্তি দেখুন।
সত্যি কথা বলতে মুসলিম জাতির জন্য কমপ্লিট কোড অফ লাইফ হচ্ছে কুর'আন মজীদ।
আর তার প্রাকট্রিক্যাল প্রয়োগ হচ্ছে হাদীস।
আমাদের শেষ নবী হয়রত মুহাম্মদ (সঃ) এর প্রতিটি বানীতেই রয়েছ জীবন ঘনিষ্ঠ অনুপ্রেরনার উৎস।
ইসলামিক জীবন ব্যবস্থা অনেকগুলো নিয়ামকের উপর দাঁড়িয়ে থাকে।
তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে মহানবীর বানী ও তার জীবনাদর্শ।
নবীজীর মুখ নিসৃত বানী গুলোই হচ্ছে হাদিস।
কুরআনকে বুঝতে হলে এবং সে মতে চলতে হলে হাদীস জানা অত্যাবশ্যক।
সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নেতা ও মোটিভেটর হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর এই মহান বানীগুলো আমাদের বাস্তব জীবনে সাফল্য এনে দিবে।
সততা, সাফল্য ও নৈতিকতার সাথে জীবন যাপন করতে এবং আখিরাতে কামিয়াবী এনে দেবে।
বুখারী শরীফের জীবন ঘনিষ্ঠ হাদীস সমুহঃ
১।যে পবিত্র থাকতে চায়, মহান আল্লাহ তাকে পবিত্র রাখে।
২।আল্লাহর পথে একটি সকাল কিংবা একটি সন্ধ্যা ব্যয় করা গোটা পৃথিবী এবং পৃথিবীর সমস্ত সম্পদের চেয়ে উত্তম।
৩।প্রতিটি মানুষ তার কাজের সেই ফলই পাবে,যা সে নিয়্যত করেছে।
৪।তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম মানুষ তারাই,যাদের আচার আচরণ সবচেয়ে ভালো।
৫।অর্ধেকটা খেজুর দান করেও তোমরা নিজেদের জাহান্নাম থেকে বাঁচাতে পারো। যদি তা-ও না থাকে, তবে সুন্দর করে কথা বলো।
৬।সব ধরনের দাগ দূর করার জন্য কিছু না কিছু আছে; মনের দাগ দূর করার জন্য আছে আল্লাহ্র স্মরণ।
৭।কোন কাজগুলো সর্বোত্তম?
– মানুষের মনে খুশির সৃষ্টি করা, ক্ষুধার্তকে খাবার দেয়া, পঙ্গু ও অসুস্থদের সাহায্য করা, দু:খীদের দু:খকে হাল্কা করা, এবং আহতের যন্ত্রণাকে লাঘব করা।
৮।তুমি তোমার হৃদয়কে সকাল থেকে রাত, ও রাত থেকে সকাল পর্যন্ত অন্যের ওপর হিংসা করা থেকে বিরত রাখো।
– হে আমার উম্মত, এটি আমার আইনগুলোর একটি, এবং যে আমার আইনকে ভালোবাসে- সে আমাকেও অত্যন্ত ভালোবাসে।
৯।একবার এক লোক রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময়ে রাস্তার ওপর কষ্টদায়ক কাঁটা যুক্ত একটি ডাল পড়ে থাকতে দেখল।
লোকটি কষ্টদায়ক বস্তুটি রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলল। আল্লাহ তাকে ধন্যবাদ দিলেন, এবং তার সব অপরাধ ক্ষমা করে দিলেন।
১০।সত্যিকার জ্ঞানী কারা? – যারা তাদের জ্ঞানকে বাস্তবে কাজে লাগায়।
১১।কোন মানুষটি আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়? – যার মাধ্যমে আল্লাহ্র অন্য সৃষ্টিকূল উপকৃত হয়।
মুসলিম শরীফের জীবন ঘনিষ্ঠ হাদীস সমুহঃ
১২।তোমরা একে অন্যের প্রতি হিংসা করোনা, ঘৃণা বিদ্বেষ করোনা এবং একে অপরের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়োনা
১৩।আল্লাহ ততোক্ষণ তার বান্দাহকে সাহায্য করেন, যতোক্ষণ সে তার ভাইকে সহযোগীতা করে।
১৪।একজন মুসলিম যদি গাছ লাগায়, অথবা জমি চাষ করে – যেখান থেকে পশু ও পাখিরা খেতে পারে – তাহলে সে একটি সদকা করল।
১৫।দয়া বিশ্বাসীর একটি চিহ্ন; যার দয়া নেই, তার মাঝে বিশ্বাস (ঈমান) নেই।
উপরের ইসলামিক উক্তি গুলো জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারলে জীবনে শান্তি ও সাফল্য ধরা দেবে।