সিজদায়ে সাহু দেবার নিয়ম এবং কেন দেওয়া হয়

 


'সিজদায়ে সাহু' অথবা 'সাহু সিজদা' কাকে বলে?


‘সিজদায়ে সাহু’ অথবা 'সাহু সিজদা' মানে হচ্ছে ভুলের সিজদা। নামাজে কোনো ওয়াজিব ভুলক্রমে ছেড়ে দিলে এই সিজদা দিতে হয়। সিজদায়ে সাহুর মাধ্যমে নামাজে ভুলের অর্থাৎ ওয়াজিব ছুটে গেলে পূর্ণতা আনা হয়।কোন কোন ভাবে আমাদের নামাজ ত্রুটিযুক্ত হয়ে পড়তে পার। তখন নামাজের শেষ বৈঠকে ডান পাশে সালাম ফেরানোর পর বাম পাশে সালাম না ফিরিয়ে দুইবার অতিরিক্ত সিজদা করতে হয়। তারপর আবার আত্তাহিয়াতু এবং দরুদ পড়তে হয়। দরুদ পড়া শেষে ডানে-বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়। এই অতিরিক্ত দুই সিজদাকে সিজদায়ে সাহু বা সাহু সিজদা।


কিভাবে নামাজ ত্রুটি যুক্ত হয়ে পড়তে পারে?


চলেন জেনে নেয়া যাক কিভাবে নামাজ ত্রুটি যুক্ত হয় পড়ে। নামাজ আদায়ের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন শর্ত আছে।সেগুলো না মানলে নামাজে হবে না। যে সাতাশ টি শর্ত না মানলে নামাজ হবে না। তার মধ্যে ১৪ টি রয়েছে ওয়াজিব।বাকি তেরো টি রয়েছ ফরজ।নামাজের মধ্যে যতগুলি ওয়াজিব বিষয় রয়েছে তার মধ্যে একটি অথবা একাধিকটি যদি ভুলবশতঃ ছেড়ে কেউ ছেড়ে যেতে পারে।এভাবে নামাজ ত্রুটিযুক্ত হতে পারে। তখন সিজদা সাহু অথবা সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে। সিজদা সাহু দিলে এতে নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে। যদি সাহু সিজদা না করা হয় তবে নতুন করে নামাজ পড়তে হবে।ভুল বশতঃ হলে কেবল এই পদ্ধতিতে নামাজ শুদ্ধ হবে।

নামাজ শুদ্ধ ভাবে পড়ার নিয়ম

নামাজের কোনো ওয়াজিব কাজ কেউ ইচ্ছা করে ছেড়ে দিলে গুনাহগার হবে। নামাজও নষ্ট হয়ে যাবে। পুনরায় আদায় করতে হবে। সিজদায়ে সাহু দ্বারা তখন নামাজ পূর্ণ হবে না।


সাহু সিজদা অথবা সিজদায়ে সাহু কখন দিতে হবে?


একাধিক কারনে সাহু সিজদা দিতে হতে পারে যেমনঃ 

১। নামাজের মধ্যে কোন ফরজ অথবা ওয়াজিব আদায়ে বিলম্ব হলে।

২। কোন ফরজ দুইবার আদায় হলে।

৩। কোন ওয়াজিব আদায় বাদ পড়লে।

নামাজ হচ্ছে ইসলাম মুল স্তম্ভগুলোর মধ্য অন্যতম।যে সকল কারনে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে ।তা হলোঃ

# নামাজের কোনো ওয়াজিব কাজ কেউ ইচ্ছা করে পরিত্যাগ করলে গুনাহগার হবে। নামাজও নষ্ট হয়ে যাবে। পুনরায় নামাজ আদায় করতে হবে। সিজদায়ে সাহু দ্বারা তখন নামাজ ত্রুটি মুক্ত হবে না।

# নামাজের কোনো ওয়াজিব কাজ ভুলক্রমে ছুটে গেলে, সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব।

# নামাজে কোনো রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়তে ভুলে গেলে সংশোধনের জন্য সাহু সিজদা দিতে হবে।

# ফরজের প্রথম দুই রাকাতে কেরাত পড়া ভুলে গেলে, শেষ দুই রাকাতে তা পড়ে নেবে। তবে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে তা নাহলে নামাজ ত্রুটি মুক্ত হবে না।

# ফরজের দুই রাকাত বা এক রাকাতে কিরাত মেলাতে ভুলে গেলে সাহু সিজদা দিতে হবে।

# যদি তিন বা চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজে প্রথম বৈঠক ভুলে যায়, তা ফরজ নামাজ হোক বা নফল নামাজ, সিজদায়ে সাহু দিতে হবে।

# বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে রুকুর আগে কুনুত পড়তে ভুলে গেলে সাহু সিজদা দিতে হবে।

#  প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদের সঙ্গে দরুদ ইত্যাদি পড়ে ফেলে, তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে।

সাহু সিজদা যেভাবে দেবে

সাহু সিজদা যার ওপর ওয়াজিব হয়েছে, সে শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ে ডান দিকে এক সালাম ফেরাবে। এরপর তাকবির বলে নামাজের মতো দুইটি সিজদা করে বসে যাবে এবং তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে সালাম ফেরাবে। সালামের আগে সিজদা করলে নামাজ হয়ে যাবে।