বিশ্বসেরা ৫ টি মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন (Top 5 Muslim architectural monuments in the world)

মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন

মুসলিম বিশ্বের রয়েছে সুপ্রাচীন ইসলামী স্থাপত্যের বহু নিদর্শন। ইসলামী কৃষ্টি ও কালচারের এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর মধ্যে মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন শৈলী প্রকাশিত। 

মুসলমান শাসকদের দ্বারা বিশ্বে এমন বহু নিদর্শন তৈরি করা আছে যা কয়েক শতাব্দী পরেও ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যে বিচারে পৃথিবীর বুকে বিশেষ স্থান দখল করে আছে।

বিশ্ব খ্যাত এই মুসলিম স্থাপত্যগুলো শিল্প ও চারুকলা এবং স্থাপত্য ও অলঙ্করণকলার সুস্থ ও মেধাবী প্রয়োগের বিবেচনায় অতুলনীয়।

সারা বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্রমণপিপাসু মুসলিম ও অন্যান্য মানুষের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নেয় এসব স্থাপনা। 

ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন সোর্স ব্যবহার করে এই তালিকা তৈরী করা হয়েছে।

০৫. হাসান দ্বিতীয় মসজিদ (কাসাব্লাংকা, মরক্কো) : 

মরক্কোর উপকূলীয় জনপ্রিয় ব্যনিজিক শহর কাসাব্লাংকায় দেশের সবচেয়ে বড় হাসান দ্বিতীয় মসজিদ অবস্থিত। মসজিদটি সেই দেশের তথা সারা বিশ্বের ঐতিহাসিক মুসলিম স্থাপত্যগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। 

দ্বিতীয় হাসান মসজিদ


বলা হয়ে থাকে, এটিই আফ্রিকার সবচেয়ে বড় মসজিদ এবং বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর মসজিদ বড় দিক থেকে সপ্তম বড় মসজিদ।মসজিদটি স্থাপিত হয়েছে এই শতাব্দীর ১৯৯৩ সালে। 

এটি ভাসমান মসজিদ (floating mosque)হিসেবেই সর্বাধিক পরিচিত। ভাসমান মসজিদ বলার কারণ  মসজিদটির তিন ভাগের এক ভাগ আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত।

অপুর্ব স্থাপত্য শৈলীর এই স্থাপনা দেখলে মনে হয় সাগরের বুকে ভাসছে। 

শহরটির মহাসাগরের তীর ঘেষে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে এক বিশাল মিনার।যার উচ্চতা ২১০ মিটার। 

আটলান্টিক মহাসাগরের নীলাভ ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে মিনারসংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী প্রাসাদোপম মসজিদের কিনারায়।

অনিন্দ্য সুন্দর কাসাব্লাংকা শহরের বেশির ভাগ স্থাপনা সাদা হলেও এই মসজিদের ইমারতগুলো লালচে।  

রাতে নিকষ কালো অন্ধকার চিড়ে জ্বলে ওঠা এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা।

অবস্থানগত কারনে মসজিদটিতে নামাজরত মুসল্লিরা সব ধরনের বানিজ্যিক দূষণ থেকে মুক্ত থেকে সমুদ্র থেকে ভেসে আশা মুক্ত সতেজ বাতাস উপভোগ করতে পারেন।

রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদের বাবা দ্বিতীয় হাসান মসজিদটি তৈরি করেন। তাই এই সুন্দর মসজিদটিকে দ্বিতীয় হাসান মসজিদ বলেও ডাকা হয়।

মসজিদটি স্থাপিত হয়েছে ১৯৯৩ সালে। রাজা দ্বিতীয় হাসানের উদ্যোগে নির্মিত এই মসজিদ কমপ্লেক্সটি ছিল নিম্ন-মধ্য আয়ের মরক্কোর ইতিহাসের সবচেয়ে উচ্চাকাক্সক্ষী প্রকল্প। 

প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮০০ মিলিয়ন ডলার, যার জোগান দেওয়া মরক্কোর সরকারের পক্ষে সম্ভব ছিল না। 

ফলে নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের একটি বিরাট অংশ সংগ্রহ করা হয় দেশের জনগণের কাছ থেকে অনুদান হিসেবে।

প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ এই মসজিদ নির্মাণের জন্য অর্থের জোগান দেন। তাদের সবাইকে সরকারের পক্ষ থেকে অনুদানের রসিদ ও একটি করে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। 

এ ছাড়া কিছু পশ্চিমারাষ্ট্রও এ কাজের জন্য ঋণ দেয়।

মসজিদ ছাড়াও এই বিশাল কমপ্লেক্সের মধ্যে আছে একটি মাদ্রাসা, হাম্মাম বা গোসলখানা, মরক্কোর ইতিহাস-সংবলিত একটি জাদুঘর, একটি কনফারেন্স হল এবং একটি সুবিশাল লাইব্রেরি।

উল্লেখ্য, মরক্কোর অন্যান্য মসজিদের মতো এই স্থানে কিন্তু অমুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধ নয়। 

বছরভর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা মায়াবী সৌন্দর্যের এই ধর্মীয় কেন্দ্রে ভিড় করে।

০৪. বুর্জ আল আরব (দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত) : 

বুর্জ আল আরব মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন। নামটি অনেকের কাছেই পরিচিত। বিশ্বের চতুর্থ সুউচ্চ হোটেল হিসেবে এটি স্বীকৃত। 

এটি মূলত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থিত একটি হোটেল।

হোটেলটি ‘বেস্ট হোটেল ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘বেস্ট হোটেল ইন দ্য মিডল ইস্ট’ ক্যাটাগরিতে স্বীকতি ও অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছে।

বুর্জ আল খলিফা


‘বুর্জ আল আরব’ মানে হলো আরবের সম্মান। যদিও কেউ কেউ বলছেন, বুর্জ আল আরবের সম্পূর্ণ অর্থ হলো ‘আরবের স্তম্ভ’। 

আরব বিশ্বের অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং আরব আমিরাতের শাসক শেখ নাহিয়ানের পরিবার সুউচ্চ ও বিলাসবহুল এই হোটেলটি নির্মাণ করেন। 

এই স্থাপনাটির স্থপতি টম রাইট। এটি নির্মাণে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অ্যাটকিনস। 

নির্মাণ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকান কন্ট্রাক্টর ম্যুরে অ্যান্ড রবার্টস। কেএসি ইন্টারন্যাশনালের ডিজাইন প্রিন্সিপাল খুয়ান চিউ নান্দনিক এই হোটেলটির ভেতরের সাজসজ্জার কাজ করেন।

দুবাইয়ের সমুদ্রের তীর থেকে ২৮০ মিটার ভেতরে কৃত্রিম একটি দ্বীপের উপর এটি নির্মাণ করা হয়েছে।

বুর্জ আল আরবে যাওয়ার জন্য সাঁকোর মতো একটি সুপ্রশস্থ পথ তৈরি করা হয়েছে।বুর্জ আল আরবের সাজসজ্জা অত্যাধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন। 

এর সৌন্দর্য দেখলেই চোখজুড়িয়ে যাবে।

০৩. মন্তাজা প্যালেস (আলেকজান্দ্রিয়া, মিসর) : 

আলেকজান্দ্রিয়া মিসরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং এই শহরেই মিসরের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর অবস্থিত। 

প্রাচীনকালে এই শহরটি বাতিঘর (প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের একটি) এবং গ্রন্থাগারের (প্রাচীন সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার) জন্য বিখ্যাত ছিল। 

আলেকজান্দ্রিয়ার নামকরণ করা হয়েছে এর প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার দি গ্রেটের নামানুসারে।

মন্তাজা প্যালেস


ইতিহাসবেত্তা অ্যারিয়ানের বর্ণনায় আলেকজান্ডার কিভাবে শহর তৈরির প্রাথমিক পরিকল্পনা করেছিলেন তা জানা যায়। 

আলেকজান্ডারের ভবিষ্যৎ দ্রষ্টারা কিছু পূর্ব লক্ষণ বিবেচনা করে বলেছিলেন যে এই শহর ব্যাপক উন্নতি করবে। 

এখানে রয়েছে মন্তাজা প্রসাদ। মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শনের অন্যতম একটি স্থাপনা এই মন্তাজা প্রাসাদ। এটি নির্মিত হয়েছে ১৯৩২ সালে। 

রাজা ফুয়াদ কর্তৃক নির্মিত একটি গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ হিসেবে এটি পরিচিত। এই স্থাপত্যটি ভূমধ্য সাগরের তীরে অবস্থিত। 

প্রাসাদের স্থাপত্যকলা তুর্কি এবং ফ্লোরেনটাইন কারুশৈলী দ্বারা সজ্জিত। প্রাসাদের রাজপথ এবং বিস্তৃত রাজকীয় বাগানগুলি সবার জন্য উন্মুক্ত। 

যে কেউ চাইলেই এখানের মনোরম পরিবেশে সময় কাটাতে পারবেন। জায়গাটি সকলের জন্য উন্মুক্ত। এখানে প্রচুর দর্শনার্থী ভীর করেন।

২. সুলতান আমির আহমদ এর গোসলখানা (কাশান, ইরান) : 

বিখ্যাত সুলতান আমির আহমদ বাথহাউস যাকে প্রসিদ্ধ কুয়েসি বাথহাউস নামেও পরিচিত।

এটি ইরানের ঐতিহ্যবাহী গোসলখানা, যেটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মক্ত। এটি ইরানের কাশানে অবস্থিত। 

ষোড়শ শতাব্দীতে এটি নির্মিত হয়। তবে ১৭৭৮ সালে ভূমিকম্পে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুনরায় নির্মাণ করা হয়।প্রায় ১ হাজার বর্গমিটারের এই গোসলখানা মুলত দুই ভাগে বিভক্ত।



একটি পোশাক পরিবর্তনের জন্য। অন্যটি গরম পানিতে গোসল করার স্থান। মুসলিম স্থাপত্য শিল্পের এক অনন্য স্থাপনা এই গোসলখানা।

স্বর্ণখচিত এই বাথ হাউজে বেশিরভাগ টাইসলই হচ্ছে নীলকান্তমণি। 

আশ্চর্য ও অলঙ্কারময় টাইলস দিয়ে সুসজ্জিত এই গোসলখানাটি শুধু মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন নয় বর্তমানে একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। 

এই স্থাপত্যটি ইরানের জাতীয় জীবনে যেমন স্থান করেছে তেমনি ঐতিহাসিকভাবে খ্যাতিলাভ করেছে।

১.ভালবাসার নিদর্শন তাজহল (আগ্রা,ভারত)ঃ 

তাজমহল ভারতের উত্তর প্রদেশে আগ্রায় অবস্থিত একটি রাজকীয় প্রেম সম্পর্কিত সমাধি।

মুমতাজ মহল নামে পরিচিত মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী আরজুমান্দ বানু বেগম তার স্মৃতির উদ্দেশে এই অপূর্ব সৌধটি নির্মাণ করেন যা ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন।

এই সমাধি সৌধটি নির্মাণ কাল ১৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে যা পুর্ণতা পেতে সময় নিয়েছিলো ১৬৫৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত।

তাজমহল


মুঘল স্থাপত্যশৈলীর একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয় এই তাজমহল কে, যার নির্মাণশৈলীতে পারস্য, তুরস্ক, ভারতীয় এবং মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন এর সম্মিলন ঘটানো হয়েছে।

বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল যা ইউনেস্কোর বিশ্বঐতিহ্যের অন্যতম স্থান হিসাবে সম্মানিত হয়েছে।

তাজমহল বিশ্বের অপূর্ব সুন্দর স্মৃতিসৌধ ও মনোমুগ্ধকর নিদর্শন। ভালোবাসার অবিশ্বাস্য স্মরণীয় ভাস্কর্য।

অপূর্ব মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন  যা শান্তি ও সৌন্দর্যের প্রতীক।মুঘল সম্রাট শাহজান তার প্রিয়তমা স্ত্রীর প্রতি অগাধ ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসাবে এই স্থাপনা নির্ণমান করেছিলেন।

যা আজো বিশ্বের সকলদেশের মানুষের কাছে সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করে আছে।

তারা মসজিদ (Star Mosque) বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইসলামিক স্থাপনা

star mosque


পুরান ঢাকার হাজারো ঐতিহাসিক ইসলামী স্থাপনার মাঝে তারা মসজিদ অন্যতম।এই শহ‌রের য‌ত ঐতিহা‌সিক মস‌জিদ আছে তার বে‌শির ভাগই পুরান ঢ‌াকায় অব‌স্থিত। 

তারা মসজিদ বর্তমান পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় আবুল খয়রাত সড়কে অবস্থিত। ধবধবে শুভ্র মার্বেলের গম্বুজের ওপর নী্লাভ তা্রকা খচিত এ মসজিদ নির্মিত হয় আনুমানিক আঠারো শতকের প্রথম দিকে। 

মসজিদের গায়ে এর নির্মাণ-তারিখ খোদাই করা ছিল না। তবে ধারণা করা হয় ১৮ শতকের শুরুর দিকে তৎকালীন ঢাকার জমিদার মির্জা গোলাম পীর তারা মসজিদ নির্মাণ করেন।তবে, মসজিদটি তৈরির পর ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে মির্জা গোলাম পীর মৃত্যুবরণ করেন।

ঝকঝকে এই মসজিদের বিভিন্ন নাম রয়েছে। মোঘল স্থাপত্য কৌশলে নির্মিত মসজিদটি অনেকের কাছে সিতারা মসজিদ বা মির্জা গোলাম পীরের মসজিদ নামে পরিচিত।

সতের শতকে দিল্লি, আগ্রা ও লাহোরে নির্মিত বিভিন্ন মোঘল স্থাপত্য শৈলী অনুসরণে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

কেন বলা হয় তারা মসজিদ?

দরজাগুলির মধ্যবর্তী ও বাইরের প্রাচীরটি গ্ল্যাজড টাইলসগুলিতে মাউন্ট ফুজির মোটিফ দিয়ে সজ্জিত এবং একটি ক্রিসেন্ট-ও-স্টার ডিজাইন দিয়ে সম্মুখের উপরের অংশটি সজ্জিত করা হয়েছে। 

সাদা মার্বেলের গম্বুজগুলিতে কয়েকশ নীল তারা তৈরি করা হয়েছে। সমস্ত মসজিদ জুড়ে, তারাগুলির মোটিফ সাজসজ্জার উপর প্রাধান্য দেয় এবং তাই মসজিদটিকে বলা হয় স্টার মসজিদ (বাংলায় তারা মসজিদ)।

মসজিদের প্রাথমিক আকার ও আকৃতিঃ 

যখন শুরু করা হয় তখন থেকেই মসজিটি আয়তাকার ছিল। মির্জা গোলাম পীর তৈরির আদি ও আসল মসজিদটির পরিমাপ ছিল দৈর্ঘ্য ৩৩ ফুট (১০.০৬ মিটার) এবং প্রস্থে ১২ ফুট (৪.০৪ মিটার), গম্বুজ ছিল সর্বসাকুল্যে তিনটি। 

এর ভিতরে মাঝের গম্বুজটি অনেক বড় ছিল। সাদা মার্বেল পাথরের গম্বুজের উপর নীলরঙা তারার নকশা যুক্ত ছিল।এর পূর্ব দিকে মসজিদে প্রবেশর জন্য তিনটি এবং উত্তর দিকে ১টি এবং দক্ষিণ দিকে ১টি দরজা ছিল।

মসজিদের সংস্করণঃ 

১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার তৎকালীন স্থানীয় ব্যবসায়ী, আলী জান বেপারী মসজিদটির সংস্কার করেন। এই সময় মসজিদটির আকার বৃদ্ধি করা হয়। এই সময় এর পূর্বদিকে একটি বারান্দা যুক্ত করা হয়। 

এই সময় মসজিদের মেঝে মোজাইক করা হয়। চিনিটিকরি (Chinitikri) কৌশলের এই মোজাইক তৈরীতে ব্যবহার করা হয় জাপানী রঙিন চীনা মাটির টুকরা এবং রঙিন কাঁচের টুকরা। 

১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে এই মসজিদটির পুনরায় সংস্কার করা হয়। এই সময় পুরনো একটি মেহরাব ভেঙে দুটো গম্বুজ আর তিনটি নতুন মেহরাব বানানো হয়। সব মিলিয়ে বর্তমানে এর গম্বুজ সংখ্যা পাঁচটিতে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে মসজিদের জায়গা সম্প্রসারিত হয়। 

মসজিদের বর্তমান আকারঃ

মসজিদের বতর্মান দৈর্ঘ্য ৭০ ফুট (২১.৩৪ মিটার), প্রস্থ ২৬ ফুট (৭.৯৮ মিটার)। এছাড়া মসজিদের দেয়ালে ফুল, চাঁদ, তারা, আরবি ক্যালিওগ্রাফিক লিপি ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয়েছে।

কিভাবে যাবেন

বাংলাদেশের যে কোন জায়গা থেকে ঢাকাতে আসতে হবে। ঢাকা শহরের যেকোন জায়গা থেকে পুরান ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় আসতে হবে। এসে রিকশা দিয়ে সহজেই আরমানিটোলা যেতে পারবেন। চানখাঁরপুল থেকে তারা মসজিদে যেতে মাত্র ৩০ টাকার মত রিক্সা ভাড়া লাগতে পারে।

কাকরাইল মসজিদ - বাংলাদেশের তাবলীগ জামাতের প্রধান কেন্দ্র (kakrail mosque - bangladesh)

কোথায় খাবেন

পুরান ঢাকার মুখোরোচক খাবারের জন্য রয়েছে দেশ জোড়া খ্যাতি। খাবারের জন্য পুরান ঢাকার রয়েছে বিশেষ ঐতিহ্য। আল রাজ্জাক, হাজীর বিরিয়ানি, কাশ্মির কাচ্চি, বিউটি বোডিং কিংবা সুলতানের চা থেকে নিঃসন্দেহে খাবারের আইটেম বেছে নিতে পারেন।ঐতিহাসিক স্থাপনা দেখার পাশাপাশি রসনা বিলাশ হতে পারে আপনার জন্য বাড়তি পাওয়া।

আশে পাশে আর কি দেখবেন?

  • রোজ গার্ডেন, 
  • আহসান মঞ্জিল, 
  • শহীদ মিনার, 
  • ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, 
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, 
  • দোয়েল চত্তর, 
  • সরোয়ার্দী উদ্যান, 
  • চারুকলা ইনস্টিটিউট, 
  • জাতীয় জাদুঘর, 
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক মিলন কেন্দ্র।


তারা মসজিদ (তারা মসজিদ) দেখার জন্য টিপস

নামাজের সময় মসজিদে বেড়াতে যাবেন না। মহিলাদের জন্য, মাথা হিজাব পড়ে মসজিদে প্রবেশ করা প্রয়োজন। এছাড়াও, পরিমিত পোশাক পরতে হবে। শর্টস পরে মসজিদে প্রবেশ করা নারী পুরুষ উভয়ের পক্ষে সম্ভব হবে না।

মসজিদটি সাধারণত নামাজের সময় বাইরে বন্ধ থাকে তবে আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন তবে মসজিদটির তত্ত্বাবধায়ক আপনাকে যে কোনও সময় দেখার জন্য এটি খুলবে।

আপনি কি কখনও স্টার মসজিদ (তারা মসজিদ) পরিদর্শন করেছেন? মন্তব্যগুলিতে আমাদের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!